সিপিডির বাজেট মূল্যায়ন: বিশ্বাসযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ
জিডিপি প্রবৃদ্ধির মোহে আটকে আছে সরকার: দায়বদ্ধতার আন্তরিকতা আছে, উদ্ভাবনের ভিত্তি নেই * জোর করে ভালো অবস্থা দেখালে বিদেশি সহায়তা পাওয়ার সম্ভাবনা কমে যায় * বাজেট গতানুগতিক * সরকার বেশি ঋণ নেয়ায় বেসরকারি বিনিয়োগে প্রভাব পড়বে
যুগান্তর রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২ জুন ২০২০, ০৬:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
প্রস্তাবিত ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে যেসব লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, এর অনেক কিছু বাস্তবতার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। বিশেষ করে আয়, ব্যয় এবং অর্থনীতির অন্যান্য সূচক কোনো কোনো ক্ষেত্রে চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি প্রবৃদ্ধি দেখানো হয়েছে।
এছাড়াও অর্থনীতির বাস্তব অবস্থা বিবেচনায় না নিয়ে এখনও মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির মোহে আটকে আছে সরকার। ব্যয়ের ক্ষেত্রে বাজেট বক্তৃতায় স্বাস্থ্য, কৃষিসহ কয়েকটি খাতে গুরুত্ব দেয়ার কথা বলা হলেও অর্থ বরাদ্দে সেভাবে গুরুত্ব পায়নি খাতগুলো। আবার অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড স্থবির থাকলেও সংশোধিত বাজেটের আয়ে ৫৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি দেখানো হয়েছে।
ঘাটতি মোকাবেলায় ভঙ্গুর ব্যাংক খাতের ওপর নির্ভর করা হয়েছে। এসবকিছুই বাজেটের বিশ্বাসযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। প্রস্তাবিত ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটকে এভাবেই মূল্যায়ন করেছে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। সংস্থাটি বলছে, করোনার কারণে ভিন্ন প্রত্যাশা থাকলেও এবারের বাজেটটিও গতানুগতিক। বাজেটে মানুষের জন্য কিছু করার বিষয়ে দায়বদ্ধতার আন্তরিকতা দেখা গেছে।
কিন্তু নতুন কোনো উদ্ভাবন নেই। সিপিডি আয়োজিত ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে শুক্রবার বক্তব্য রাখেন সংস্থাটির বিশেষ ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান, নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন, গবেষণা পরিচালক ড. খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম এবং সিনিয়র রিসার্স ফেলো ড. তৌফিকুল ইসলাম খান।
বক্তারা বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি ব্যয় এবং ৩ লাখ ৭৮ হাজার কোটি টাকা আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে ঘাটতি ধরা হয়েছে ১ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা। যা জিডিপির ৬ শতাংশ। প্রস্তাবিত বাজেট তৈরির প্রক্রিয়াটি করোনার আগেই শুরু হয়।
এরপর করোনায় অর্থনীতির প্রেক্ষাপটে পরিবর্তন এলেও বাজেটের অনেক ক্ষেত্রে তা পরিলক্ষিত হয়নি। তারা বলেন, প্রবৃদ্ধিকেন্দ্রিক প্রচারণার কারণে আন্তর্জাতিকভাবে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারি। কারণ, এমনভাবে তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করা হচ্ছে, যেন করোনার মধ্যেও আমরা ভালো আছি।
কিন্তু আন্তর্জাতিক অনেক তহবিল গঠন হচ্ছে। এগুলো আক্রান্ত দেশের ক্ষতির বিবেচনায় দেয়া হবে। ফলে আমাদের তথ্যের কারণে তহবিল পেতে সমস্যা হতে পারে।
ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, মোটা দাগে এ বাজেট নিয়ে আমাদের মূল্যায়ন ৩টি। সিপিডি মনে করছে, এটি গতানুগতিক বাজেট। কারণ করোনার কারণে স্বাস্থ্যগত, অর্থনৈতিক, মানবিক এবং সামাজিক খাতে নজিরবিহীন সংকট সৃষ্টি হয়েছে। এ ধরনের বহুমুখী সংকট মোকাবেলায় বাজেট আরও সৃজনশীল হওয়া উচিত ছিল।
কিন্তু এবারের বাজেটে আমরা তা দেখিনি। করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত খাতগুলোতে আমরা সে ধরনের অগ্রাধিকারও পাইনি। এক্ষেত্রে সরকার ধারণা করেছে, আগামী অর্থবছরের মধ্যেই তারা এ সংকট থেকে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে। কিন্তু আমরা জানি, এখন পর্যন্ত করোনা একটি চলমান প্রক্রিয়া। এটি কতদিন থাকবে, তার ওপরে এর ক্ষতি নির্ভর করবে।
ফলে অর্থনৈতিক নীতিমালাটিও সে অনুসারে হওয়া উচিত ছিল। তিনি বলেন, আমরা সব সময় বলে আসছি, ৪টি খাতকে এবারের বাজেটে বেশি গুরুত্ব দেয়া উচিত ছিল। এগুলো হল- স্বাস্থ্য, কৃষি, সামাজিক নিরাপত্তা ও কর্মসংস্থান। সরকারও এগুলোতে অগ্রাধিকারের কথা বলেছে, কিন্তু তা বাস্তবায়নে যে অর্থ ও প্রতিশ্রুতি দরকার, আমরা সেটি দেখতে পাইনি।
দ্বিতীয়ত, সিপিডি সব সময়ই বাজেট বাস্তবায়নের সক্ষমতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে। বছরের পর বছর এ সক্ষমতা কমছে। বর্তমানে দেশের স্বাস্থ্য খাতের দিকে তাকালে এর বাস্তব প্রমাণ আমরা দেখতে পাই। বর্তমানে কর আহরণ ও ব্যয়ের ক্ষেত্রে যে সমস্যা দেখছি, তা আমাদের সক্ষমতার অভাবের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে।
যে কোনো সংকটের সময় সুশাসনের অভাব ও সংস্কারের দুর্বলতাগুলো প্রকট হয়ে উঠে। তিনি বলেন, এর আগে সরকার কর আদায়, ব্যাংক ও বীমা খাতের সংস্কারের জন্য বেশ কিছু প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু সেগুলো বাস্তবায়ন করেনি। ফলে করোনাকে সামনে রেখে সুশাসন ও সংস্কারের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে আমাদের সামনে এসেছে। করোনার কারণে নতুন দারিদ্র্য, আয় ও ভোগের ক্ষেত্রে বৈষম্য সৃষ্টি হয়েছে। সেগুলো মোকাবেলায় সৃজনশীলভাবে কিছু পদক্ষেপ নেয়া উচিত ছিল।
তৃতীয়ত এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, সামষ্টিক অর্থনীতির যে কাঠামোর কথা বলা হল, তা বাস্তবতার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। করোনার মহামারীর সময় মূল উদ্দেশ্য হওয়া উচিত দরিদ্র ও ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে কিভাবে বাঁচিয়ে রাখা যায় ধরনের বিষয়কে প্রাধান্য দেয়া, অর্থনীতি পুনরুদ্ধার এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে আবারও গতি ফিরিয়ে আনা।
কিন্তু সরকারের কর্মকাণ্ডে মনে হচ্ছে, মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির প্রতি, তাদের যে মোহ, সেটিই ঘুরেফিরে সামনে চলে আসছে। আমরা দেখছি, করোনায় আক্রান্ত পৃথিবীর উন্নত, উন্নয়নশীল ও স্বল্পোন্নত সব দেশ, যারা অর্থনৈতিকভাবে চাপে রয়েছে, তারা জিডিপি প্রবৃদ্ধি নিয়ে চিন্তিত নয়।
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান জিডিপির যে পূর্বাভাস দিয়েছে, তাতে দেখা গেছে, অনেক বড় অর্থনীতির দেশও নেতিবাচক প্রবৃদ্ধির দিকে যাচ্ছে। একই অবস্থা আমাদের প্রতিবেশী ভারত ও বড় অর্থনীতির দেশ চীনে। ফলে প্রবৃদ্ধির হার নিয়ে চিন্তার সময় এখন নয়। তিনি বলেন, এখনও আমাদের ক্ষয়ক্ষতি কমানো এবং অর্থনীতি পুনরুজ্জীবনে নজর দেয়া উচিত।
ফাহমিদা খাতুন বলেন, জিডিপি প্রবৃদ্ধির পাশাপাশি সরকার অর্থনীতির অন্যান্য যে সূচকের কথা বলছে, সেটি বাস্তবতার আলোকে দেয়া উচিত ছিল। এর মধ্যে রয়েছে- আমদানি, রফতানি, সরকারি ব্যয়, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি, বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ, কর আহরণ এবং ঋণপ্রবাহ। আমাদের কাছে মনে হয়েছে, এগুলো বাস্তবতার আলোকে দেয়া হয়নি।
তিনি বলেন, অর্থনৈতিক পারফরমেন্স যদি সঠিকভাবে তুলে ধরা না হয়, সেটি শুধু দেশের ভেতরেই ভুল সংকেত দেবে না, আন্তর্জাতিকভাবেও আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হব। কারণ আমরা যদি প্রচার করি, করোনার সময়ও আমরা ভালোই আছি। আমাদের অর্থনীতিতে তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি। আমাদের প্রবৃদ্ধি, বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান ও সম্পদের অবস্থা ভালো।
তাহলে করোনা মোকাবেলায় যেসব আন্তর্জাতিক তহবিল তৈরি হয়েছে, এসব প্রচারণা সেখানে অর্থ পাওয়ার ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। তিনি বলেন, এ তহবিল থেকে অর্থ পাওয়ার জন্য প্রতিটি ক্ষতিগ্রস্ত দেশ বিশ্বব্যাংক এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলসহ (আইএমএফ) বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে ধরনা দিচ্ছে।
এক্ষেত্রে কোনো দেশ অর্থনৈতিকভাবে কতখানি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তার হিসাব-নিকাশ করে, আন্তর্জাতিক সংস্থা তহবিলের পরিমাণ নির্ধারণ করবে। এসব কারণে আমরা বলছি, প্রবৃদ্ধিকেন্দ্রিক তৎপরতার কারণে আন্তর্জাতিক সুযোগ-সুবিধা থেকে আমরা যেন বঞ্চিত না হই।
অন্যদিকে আমরা দেখেছি, করোনার মধ্যেও অর্থনীতির সূচকগুলো নির্ধারণের ক্ষেত্রে এর আগে মধ্যমেয়াদি অর্থনৈতিক কাঠামো তৈরি করা হয়েছিল, সরকার সেখান থেকে সরে যেতে চায়নি। অর্থাৎ বাজেটের কাঠামো করোনার আগেই তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু করোনা কারণে সামগ্রিক অর্থনীতির গতি-প্রকৃতিতে পরিবর্তন এলেও আমাদের বাজেটে সেই পরিবর্তনটি প্রতিফলিত হয়নি।
তিনি বলেন, করোনা কোথায় থামবে তা আমরা জানি না। ফলে বাস্তবতা বিবেচনায় নিতে ৬ মাস পর বাজেট পুনর্মূল্যায়নের প্রয়োজন হতে পারে। সে ব্যাপারে আমাদের মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে।
সিপিডির নির্বাহী পরিচালক বলেন, চলতি অর্থবছরের বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৮ দশমিক ২ শতাংশ। কিন্তু সংশোধিত বাজেটে তা ৫ দশমিক ২ শতাংশ করা হয়েছে। এছাড়াও সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে মোট বিনিয়োগ ৩৩ দশমিক ৫ শতাংশ। কিন্তু সংশোধিত বাজেটে কমিয়ে ২০ দশমিক ৮ শতাংশ করা হয়েছে।
এক্ষেত্রে বেশি কমানো হয়েছে বেসরকারি বিনিয়োগ। চলতি বছরের বাজেটে বেসরকারি বিনিয়োগ ছিল, মোট জিডিপির ২৪ শতাংশ। কিন্তু সংশোধিত বাজেটে কমিয়ে ১২ দশমিক ৭ শতাংশ করা হয়েছে। আগামী অর্থবছরে সেটি দ্বিগুণ করে ২৫ দশমিক ৩ শতাংশ করা হয়েছে। এটি অসম্ভব। অনদিকে বেসরকারি খাতে ঋণ কমবে।
এপ্রিল পর্যন্ত বেসরকারি খাতের ঋণের প্রবৃদ্ধি ছিল মাত্র ৮ দশমিক ৮ শতাংশ। এ হার ২০১১ সালের জুলাই থেকে এ পর্যন্ত গত ১০ বছরের মধ্যে সর্বনিু। এ হার ভিত্তি করে আগামী অর্থবছরে ১৬ দশমিক ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে। সে হিসাবে বেসরকারি খাতে প্রবৃদ্ধি ১২৫ দশমিক ২ শতাংশ। এটি একেবারে অসম্ভব। তিনি বলেন- আমদানি, রফতানি এবং রেমিটেন্সে যে প্রবৃদ্ধি দেখানো হয়েছে, তার সঙ্গে বাস্তবের মিল নেই।
ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে মনে হয়েছে, দায়বদ্ধতার ব্যাপারে সরকারের আন্তরিকতা আছে এবং উদ্ভাবন নেই। গতানুগতিকের বাইরেও যাওয়ার কর্মসূচি আমরা দেখিনি। হিসাব মেলানোর জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে অবাস্তব একটি টার্গেট দেয়া হয়েছে। আমাদের প্রত্যাশা ছিল স্বাস্থ্য খাতে আরও গুরুত্ব দেয়া হবে।
কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। কর ফাঁকি মোকাবেলায় কিছু পদক্ষেপ আশা করেছিলাম। কিন্তু নেয়া হয়নি। সবকিছু মিলে একটি দুর্বল বাজেটীয় কাঠামোর দিকে আমরা যাচ্ছি। অন্যদিকে বেসরকারি বিনিয়োগ পরিকল্পনায় আমরা উলম্ফন দেখেছি। চলতি অর্থবছরে তা ছিল জিডিপির ১২ দশমিক ৭ শতাংশ। আগামী অর্থবছরে তা ২৫ শতাংশ করা হয়েছে।
এক্ষেত্রে বেসরকারি খাতের ঋণের জন্য ব্যাংকগুলোর সক্ষমতার কথা ভাবা উচিত। এমনিতেই ব্যাংকগুলোর খারাপ অবস্থা। এরপর ব্যাংকগুলো ইতোমধ্যে অনেকগুলো প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়ন করছে। এছাড়াও বাজেট ঘাটতি মেটাতে সরকার ব্যাংক থেকে ৮৬ হাজার কোটি টাকার মতো ঋণ নেবে। আর সরকার এ পরিমাণ ঋণ নিলে বেসরকারি খাতে অর্থের সমস্যা হবে।
তিনি বলেন, বাজেটের জন্য আমরা যখন কোনো লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করি, তার সঙ্গে অর্থনীতির অন্যান্য সূচকগুলো জড়িত। এর সঙ্গে কর্মসংস্থান, মানুষের আয়, প্রকল্প বাস্তবায়নের হার এবং সামগ্রিকভাবে অর্থনৈতিক কাঠামো জড়িত। ফলে অবাস্তব লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করলে অন্যান্য খাতেও এর প্রভাব পড়ে। উদাহরণস্বরূপ লক্ষ্যমাত্রায় ভুল হলে, মূল্যস্ফীতি অনেক বেড়ে যেতে পারে।
ড. খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, বাজেটে দেখে মনে হয়েছে, সরকার সবাইকে খুশি রাখতে চেয়েছে। কাউকে চাপে ফেলতে চায়নি। কিন্তু বাস্তবতার ভিত্তিতে করা হলে কোনো কোনো পক্ষ চাপে পড়ত। এছাড়াও অস্বাভাবিক লক্ষ্যমাত্রার পেছনে সরকারের একটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে থাকতে পারে।
কারণ ২০২১ সালটি বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর। ফলে এ বছরে সরকার, তাদের অর্জনগুলোকে একটু ভিন্ন প্রেক্ষাপটে রাজনৈতিকভাবে দেখতে চায়। এ কারণে বিভিন্ন সাশ্রয়ী পদক্ষেপে না গিয়ে সবাইকে খুশি রাখার চেষ্টা থাকতে পারে। বাস্তবতা হচ্ছে, পৃথিবীর সব দেশই বলছে, স্বাস্থ্য ঝুঁকি রেখে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার সহজ হবে না।
সেই দিক বিবেচনায় বাংলাদেশেও বাজেটে উদ্ভাবনী কৌশলে যাওয়া যেত। তৌফিকুল ইসলাম খান বলেন, করোনা মোকাবেলায় এবারের বাজেটে সরকার মোট ২১ হাজার ২২ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। কিন্তু একই অর্থবছরে সরকার পুঁজিবাজার ও অন্যান্য জায়গায় দেয়ার জন্য ২৮ হাজার কোটি টাকা রেখেছে। একই সময়ে সরকারি প্রতিষ্ঠানে ঋণ দেয়ার জন্য প্রায় ২৩ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এর মানে হল, করোনার চেয়ে অন্য খাতে অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে।
